এ কে এম আব্দুল্লাহ্, নেত্রকোণা: নেত্রকোণার কেন্দুুয়ায় একটি জুয়ার আসরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৮ জুয়ারীকে আটক করেছে। এ সময় পুলিশের হাত থেকে বাচঁতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে হালিম মিয়া (৩৮) নামের এক জুয়ারী নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ। তবে অভিযান চলাকালে কোনো জুয়ারী নিখোঁজ হয়েছে, স্বজনদের এ দাবী অস্বীকার করছেন পুলিশ।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউপির তাম্বূলিপাড়া এলাকার কৈজানি নদীতে একটি নৌকায় জুয়ার আসর চলাকালীন কেন্দুয়া থানার পুলিশ এ অভিযান চালায়। নিখোঁজ হালিম মিয়া কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা গ্রামের আব্দুল হামিদ (সুনু মিয়া) এর ছেলে।
আটকৃত জুয়ারীরা হলেন, মদন উপজেলার হারিকুল (৩৬) ইসলাম (৫৩), শরীফ আহমেদ (২৯), আলমগীর হোসেন (৪২), রফিকুল ইসলাম (৩৫), নেত্রকোণার সদর উপজেলার সুমন মিয়া (৩৬), আটপাড়া উপজেলার মুস্তাকিম (৩৫), ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার আতাউর রহমান (৩০)।
স্থানীয়রা জানায়, একটি প্রভাবশালী জুয়ারী চক্র বেশ কিছুদিন যাবৎ কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের তাম্বূলিপাড়া এলাকায় কৈজানি নদীতে ট্রলারে জুয়ার আসর বসিয়ে জুয়া খেলা চালিয়ে আসছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন্দুুয়া থানার পুলিশ শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে জুয়ার আসরে হানা দেয়। এ সময় জুয়ারীরা পুলিশের হাত থেকে বাচঁতে নদীতে ঝাঁপ দেয়। পুলিশ ৮ জুয়ারীকে আটক করতে পারলেও অন্য জুয়ারী সাতরিয়ে নদীর তীরে উঠে পালিয়ে যায়।
নিখোঁজ হালিম মিয়ার সহপাঠী জুয়েল মিয়া জানান, হালিমসহ আমরা কয়েকজন নৌকায় জুয়ার আসরে খেলতে এসেছিলাম। পুলিশ কৌশলে অন্য নৌকা দিয়ে আমাদের নৌকায় উঠে পড়ে। পুলিশ দেখে যে যেভাবে পারে পানিতে ঝাঁপ দেয়। আমি হালিমের সাথে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার খেটে তীরে উঠতে পারলেও হালিম তীরে উঠতে পারেনি।
হালিম মিয়ার স্ত্রী পূর্বকন্ঠকে জানান, ওই নৌকায় জুয়ার আসরে হালিম ছিল। তাদের দাবী নদীতে ঝাঁপ দেওয়া জুয়ারীদের মধ্যে হালিম নিখোঁজ রয়েছে।
নিখোঁজ হালিমের চাচাত ভাই সোহাগ জানান, ঘটনার পর থেকে তারা রাতভর বিভিন্ন স্থানে হালিমকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শনিবার সকাল বেলা কেন্দুুয়া ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। কেন্দুুয়া ফায়ার সার্ভিস দুপুর পর্যন্ত নদীতে তল্লাশী চালিয়ে নিখোঁজ হালিমের সন্ধ্যান না পেয়ে অবশেষে ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের একদল ডুবুরীকে খবর দেয়।
ময়মনসিংহ থেকে ডুবুরী দল এসে সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চালােেলও হালিমের কোন সন্ধ্যান পাননি। হালিম মিয়া নিখোঁজ থাকায় পরিবারে বইছে শোকের মাতম।
এ ব্যাপারে কেন্দুুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এনামুল হক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ শুক্রবার বিকালে নদীতে ট্রলারের মধ্যে একটি জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে আটক করলেও বেশ কয়েকজন সাঁতার কেটে তীরে উঠে যায়। আটককৃত আসামিদের তথ্য অনুযায়ী হালিম নামে কেউ নিখোঁজ হয়নি। এর পরও যদি কেউ নিখোঁজ হয়ে থাকে তাহলে পুলিশ তার দায় এড়াতে পারেনা।
0 Please Share a Your Opinion.: